বুধবার, জানুয়ারী ২২, ২০২৫ ||

মুক্তদিন

প্রকাশ:

শুক্রবার, জানুয়ারী ১০, ২০২৫ || ০৫:১০ PM

দেখা হয়েছে 138

মুক্তদিন বিশেষ প্রতিবেদনঃ

হোম / ভ্রমন

অলস দুপুরে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে

প্রকাশ:

শুক্রবার, জানুয়ারী ১০, ২০২৫ || ০৫:১০ PM

138

মুক্তদিন বিশেষ প্রতিবেদনঃ

অলস দুপুরে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে

ছবি : মুক্তদিন

ময়মনসিংহকে বলা হয় সিটি অব আর্ট অ্যান্ড কালচার বা শিল্প সাহিত্যের নগরী। শিল্প সাহিত্য চর্চার ধারাবাহিক ঐতিহ্যের কারনে এ ধরণের নামকরণ।  এ জনপদের শিল্প চার্চায় প্রাচীন কাল থেকেই ব্রহ্মপুত্র নদের প্রভাব রয়েছে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন যেমন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বসে ছবি এঁকে এঁকে বিখ্যাত হয়েছেন। তেমনি বিখ্যাত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এখনো অসংখ্য নতুন শিল্পি নিজেদের  শিল্পচার্যায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে জড়ো হয় প্রতিদিন।

হাল আমলে ব্রহ্মপুত্রকে নিয়ে আরও একটি কথা খুব দ্রুত ছড়িয়ে গেছে। সেটি হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ যেন ময়মনসিংহের ফুসফুস।  ময়মনসিংহ নগরে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেঁষে থাকা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানে প্রতিদিন বেড়াতে যায় অসংখ্যা মানুষ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অসংখ্যা মানুষের পদাচারণায় মুখর থাকে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের জয়নুল উদ্যান। বাইরে থেকে কোন মানুষ একদিনের জন্যও ময়মনসিংহে গেলে কোন এক ফাঁকে এ উদ্যানে যেতে ভুলে না।

শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম, বর্ষা বা হেমন্তে এখানে বেড়াতে আসে মানুষ। প্রত্যেক ঋতুতেই ব্রহ্মপুত্র পাড়ের সৌন্দর্য ভিন্ন ভিন্ন রূপে মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। শীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে জবুথবু হয়ে বসে চা পান দর্শনার্থীদের যেমন মুগ্ধ করে, তেমনি বসন্তে অসংখ্য গাছের পাতাঝড়া দেখার আনন্দ ভিন্নমাত্রা যোগ করে। বর্ষায় চায়ের দোকানের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে কোন রকমে বৃষ্টি বাঁচিয়ে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে বৃষ্টিপাত দেখাও কিন্তু মন্দ লাগে না।

সুর্যোদয়ের আগে থেকেই মুখর হয়ে উঠে ময়মনসিংহের জয়নুল উদ্যান। এ উদ্যানের ঘুম ভাঙে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের শরীর চর্চায়। ভোর থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ এখানে হাঁটতে যায়। হাঁটাতে যাওয়া মানুষেরা উদ্যান ছাড়ার আগেই নতুন করে ভিড় শুরু হয় কলেজ বিশ্ববিদ্যায় পড়ুয়া তরুণদের পদাচারণায়। এ ভিড় থাকে দুপুর পর্যন্ত। অসল দুপুরে নদের পাড় ঘেঁষে থাকা চায়ের দোকানগুলো  দলে দলে বসে আড্ডায় মেতে থাকে তরুণ-তরুণীরা। বিকাল আর সন্ধ্যায় তো কথেই নেই। সব সময়ের মানুষের ঢল নামে তখন।

প্রতিদিন কেন ব্রহ্মপুত্র পাড়ে আসতেই হয়- এমন প্রশ্ন নিয়ে আজ শুক্রবার ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে আড্ডারত একদল তরুণ-তরুনীর সঙ্গে কথা হয়। তাদের ভাষ্য এমন, একদিন না গেলে মনে হয় সে দিনটাই যেন আমার সবচেয়ে খারাপ কাটল। এখানকার মুক্ত বাতাস আর আমাদের প্রাণোচ্ছল আড্ডা ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে টেনে আনে তাদের।


মূলত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে এ উদ্যান। উদ্যানের এক পাড়ে  অসংখ্যা শতবর্ষী গাছের্ ছায়ায় রয়েছে জয়নুল সংগ্রহশালা। সরকারের  সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এ সংগ্রহশালায় রয়েছে শিল্পাচার্যের আঁকা ছবি, ছবি আঁকায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও ব্যক্তিগত জীবনে ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিস। সাধারণ দর্শানার্থীদের জন্য  এ সংগ্রহশালা খোলা থাকে। দর্শানার্থীদের সুবিধার জন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারও একটি খোলা থাকে বিকাল তিনটা থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। সংগ্রহাশালার পাশেই রয়েছে একটি গণপাঠাগার। প্রতি শুক্রবার এ উদ্যানে চলে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের পাঠচক্র বীক্ষণ।

ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে ভ্রমনপিপাসুরা এখানে প্রতিদিন আসে। ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেন থেকে নেমে রিকশায় খুব সহজেই যাওযা যায় এ  উদ্যানে। অনেকেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুধু কয়েক ঘন্টার জন্য এখাতে বেড়াতে আসে। এ শীতে এমন সুযোগ যেকেই নিতে পারেন।