রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫ ||

মুক্তদিন
হোম / খবর

ইতালিতে অনুষ্ঠিত স্পেশাল অলিম্পিক

নান্দাইলের বাক প্রতিবন্ধী স্বর্ণার আবারও সাফল্য

প্রকাশ:

সোমবার, মার্চ ১৭, ২০২৫ || ০৬:৩৭

137

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদক

নান্দাইলের বাক প্রতিবন্ধী স্বর্ণার আবারও সাফল্য

ইউএনওর সাথে স্বর্ণা আক্তার। ছবি: মুক্তদিন

প্রতিবন্ধীদের জন্য ইতালিতে অনুষ্ঠিত শীতকালীন বিশেষ অলিম্পিকের ফ্লোর বল ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশ দল। ওই খেলায় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বারুইগ্রামের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার। ওই খেলায় স্বর্ণা শুধু অধিনায়কত্ব-ই করেননি তিনি একটি গোলও করেছেন।


স্বর্ণপদক জয়ী বাংলাদেশ দলটি আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে পৌছার পর তাঁদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়। অফিসিয়াল কাজ শেষ করে দলটির অধিনায়ক স্বর্ণা আক্তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। 

খবর পেয়ে নান্দাইল উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বর্ণা আক্তারকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেয়। এ সময় সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার উপস্থিত হয়ে স্বর্ণার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।

২০২৩ সালে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন বিশেষ অলিম্পিকে ফুটবলে দলের হয়ে স্বর্ণ পদক জেতার পাশাপাশি স্বর্ণা আক্তার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

স্বর্ণা আক্তারের শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান আকন্দ জানিয়েছেন গত শনিবার দুপুরে ইতালির তুরিনে নারী ফ্লোর বল খেলার চুড়ান্ত পর্বে ইউক্রেনকে ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ দল। বিজয়ী দলের হয়ে অধিনায়ক স্বর্ণা, ফাতেমা, ফাবিয়া ও তামাল্লিন একটি করে গোল করেন। এর আগে গত শুক্রবার  সেমিফাইনালে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর দলকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে বাংলাদেশ। অপর গ্রুপে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ইউক্রেন।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শারীরিক, মানসিক প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু-কিশোরদের নিয়ে দুই ধরনের অলিম্পিক গেমস হয়। যা প্যারা অলিম্পিক ও স্পেশাল অলিম্পিক নামে পরিচিত। গত ৭ মার্চ বাংলাদেশ দলটি ইতালিতে যায়।

জানা যায়,অলিম্পিক গেমসে কখনো পদক জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে স্পেশাল অলিম্পিকে অনেক পদক রয়েছে লাল-সবুজদের।  ইতালির তুরিনে এবারের স্পেশাল অলিম্পিকের উইন্টার গেমসে বাংলাদেশ নারী ফ্লোরবল দল স্বর্ণপদক জিতেছে।

স্বর্ণা আক্তার- নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম গ্রামের কৃষক মো. নুরু মিয়ার (৫৫) কন্যা। নুরু মিয়ার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে স্বর্ণা তৃতীয়। স্বর্ণা জন্ম থেকেই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। এ কারণে স্বর্ণার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বেসরকারি সংস্থা নান্দাইল উপজেলার সেবা ফাউন্ডেশন পরিচালিত সেবা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে। বর্তমানে সেখানে সে দশম শ্রেণিতে পড়ছে। 

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান আকন্দ আরও জানান, খেলাধুলার প্রতি স্বর্ণা আক্তারের খুবই আগ্রহ ছিল। স্বর্ণা ছাড়াও তাঁর বিদ্যালয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন আরো আটজন শিক্ষার্থী রয়েছে। গত চার বছর ধরে এসব শিশুদের সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) নিয়ে গেছেন। সেখানে প্রশিক্ষণের সময় স্বর্ণা আক্তার কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েন। স্বর্ণা আক্তার এখন দেশের তালিকাভুক্ত খেলোয়াড়। স্পেশাল অলিম্পকে বাংলাদেশ মহিলা ফ্লোরবল ক্রীড়া দলের হয়ে খেলতে ইতালিতে গিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিক দলের প্রধান কোচ মো. জাহিদ হোসেন বলেন, স্বর্ণা আক্তার এক ব্যতিক্রমি খেলোয়াড়। তাঁর প্রবল ইচ্ছা শক্তি। প্রতিটি খেলায় তাঁর পারমরমেন্স ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বর্ণার অধিনায়কত্বে দলটি ছিল উজ্জীবিত। তাঁকে নিয়ে অনেক কিছু আশা করা যায়।
-----Ad1----