ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ হওয়া নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার কন্যা সন্তানের মা রয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্ম হয় এ নবজাতকের। জন্মের পর আগেই বাবাকে হারানো এ মেয়ের নাম রাখা হয়েছে সাবরিনা বিনতে সিদ্দিকী।
শহীদ রাকিবের নবজাতককে দেখতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পুনাইল গ্রামে যান ছাত্রদল ও যুবদল নেতা-কর্মীরা। রকিবের কন্যা সন্তানকে স্বাগত জানাতে তারা এলাকায় মিষ্টি মিষ্টি বিতরণ করেন। একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সোনার আংটি উপহার দিয়ে শহীদ কন্যা সাবরিনাকে বরণ করেছেন তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পুর ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈশ^রগঞ্জের তারুন্দিয়া ইউনিয়নের পুনাইল গ্রামে শহীদ রাকিবের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রী ও কন্যা সন্তানের সার্বিক খোঁজ খবর নেন। পরে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সোনার আংটি পড়িয়ে দেন শহীদ রাকিবের কন্যা সাবরিনার হাতে। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাতেও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে নতুন কাপড় তুলে দেন।
গত ১৯ জানুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেয়ার পর সাদিয়া তার মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের পুনাইল গ্রামে অবস্থান করছেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পু বলেন, ‘গত বছরের ২০ জুলাই কলতাপাড়া বাজারে কারফিউ ভঙ্গ করে আমরা ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। রাকিব তার অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে আমাদের সাথে কলতাপাড়া বাজারে আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গত ১৯ জানুয়ারি রাকিবের স্ত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সোনার আংটি দিয়ে শহীদ রাকিবের কন্যাকে বরণ করেছি,।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবিদ হাসান রাহাত বলেন, রাকিব তার মেয়ের মুখ দেখার আগেই দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। মেয়েও কোনদিন বাবার মুখ দেখতে পারবে না। আমরা মিষ্টি বিতরণ করে রাকিবের পরিবারের সাথে আনন্দটা ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি। রাকিবের স্ত্রী সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের দায়িত্ব যেন সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয় এটাই আমাদের দাবি।
শহীদ নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আজকে পাপ্পু ভাই সোনার আংটি সহ নানা উপহার নিয়ে মেয়েকে দেখতে এসেছেন এতে আমি আনন্দিত। কিন্ত স্বামীর অবর্তমানে এই মেয়েকে কিভাবে লালন-পালন করে বড় করবো সেটাই দুশ্চিন্তার বিষয়। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার ও মেয়ের সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য সবার কাছে দাবি জানাচ্ছি’।
নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব ময়মনসিংহের গৌরীপুরের রামগেপালপুর ইউনিয়নের দামগাও গ্রামের আব্দুল হালিম শেখের ছেলে। গত বছরের ১২ জানুয়ারি রাকিব বিয়ে করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের পুনাইল গ্রামের সাহাব উদ্দিনের মেয়ে সাদিয়া আক্তারকে। গত ২০ জুলাই গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হন রাকিব। সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান।