
কাব্যগ্রন্থের নাম ‘চল্লিশ কদম পর’। মৃত্যুর পর মানুষকে কবর দেওয়ার পর স্বজনেরা কবর থেকে চল্লিশ কদর দূরে যেতেই ফেরেস্তারা শুরু করে কবরের সাওয়াল জওয়াব। এ বিষয়টি বোঝাতেই কাব্যগ্রন্থের নাম ‘চল্লিশ কদর পর’ এটি কবি শামীম আশরাফের প্রথম কাব্যগন্থ।
বইমেলা ২০২৫ এ প্রকাশিত হয়েছে ‘চল্লিশ কদর পর’। এ খবর পুরানো। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চল্লিশ কদর পর কাব্যগ্রন্থ সারা ফেলেছে এ গ্রন্থের কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে দশটায় অনুষ্ঠিত হয় কবিতা পাঠের এ আসর। কবিতা পাঠের আয়োজন হিসাবে বেছে নেওয়া হয় ভূতুরে গাছ হিসাবে পরিচিত তেতুল তলাকে।শুধু তেঁতুলতলাতেই শেষ নয় গা ছমছমে এ আয়োজনের। তেঁতুলতলাকে সাজানো হয় কবরের আবহে। ‘চল্লিশ কদম পর’ লিখে কবরের নাম ফলকের অনুকরণে করা হয় একটি নাম ফলক।পাশে নতুন কবরে যেভাবে রাখা হয় খেজুর গাছের ডাল তেমনি একটি খেজুর গাছের ডালও রাখা হয় নামফলকের পাশে।এরমধ্যে কবিতা পাঠকারী ও বাদকদের জন্য রাখা হয় কয়েকটি চেয়ার। বাকিরা বসে ছিলেন কিছুটা দূরে। অন্ধকারের ভেতর নান্দনিক ভাবে আলোর ব্যবহার পরিবেশটিকে এমনই জীবন্ত করে তুলেছিল যে, মনে হচ্ছিল সত্যিই যেন কিছুক্ষণ আগে কাউকে কবর দেওয়ার পর হচ্ছে কবিতা পাঠ।
নিঃস্তব্ধ্ এমন পরিবেশে ভেসে আসছিল একের পর এক কবিতা। শামীম আশরাফের ‘চল্লিশ কদম পর’ থেকে কবিতা পাঠের এ ব্যতিক্রম আয়োজনের নাম ছিল ‘বন্ধুর ঠোঁটে বন্ধুর কবিতা’। কবি শরৎ সেলিমসহ আরও কয়েকজন কবি মিলে করেন এ আয়োজন।
কবি শরৎ সেলিম বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু পরিকল্পনা করেছিলাম নিবিড় ও কোলাহলমুক্ত একটি আয়োজন করার। এবং আমরা যার শিরোনাম দিয়েছিলাম 'বন্ধুর ঠোঁটে বন্ধুর কবিতা'। রোজার মাসে রাতের বেলায় এমন আয়োজনের কিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল। তবে সব ছাপিয়ে আমরা চল্লিশ কদর পর থেকে কবিতা পাঠ করতে পেরেছি সফল ভাবে।
এ অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী রুবীনা আজদ, আবৃত্তিশিল্পী আফতাব আহমেদ মাহবুব, নাহিন শিল্পী, আসাদুজ্জামান রুবেল ও সূর্য খান। তাদের অনবদ্য পরিবেশনায় আয়োজন আঙিনা হয়ে উঠেছিলো অন্ধকারে শব্দের আলোয় মুখরিত। চল্লিশ কদম পর থেকে- বুলেটের ঠোঁট, সমুদ্রের গাড়ি, কলমের চোখ, সুতিয়া নদী, টাউনহল, তাপ ও তপস্যার গান, বিক সূর্যের নিচে শিরোনামের কবিতাসহ বেশ কিছু কবিতা আবৃত্তিতে উঠে আসে বন্ধুদের ঠোঁটে।
একই সঙ্গে বাজতে থাকে সাইদুল আলমের রাবাব ও আকাশের বাঁশি সুরের মুর্ছনা। আয়োজনটি শুরু হয় অনিরুদ্ধ শুভর কণ্ঠে 'একদিন মাটির ভিতর হবে ঘর' গান দিয়ে।
সংস্কৃতিপ্রেমী মাহমুদুল হাসান রনু, কবি কাঙাল শাহীন, আরাফাত রিলকে, আলিমুল কারিগর, হৃদয় মাহমুদ কথা বলেন এ অনুষ্ঠানে। আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে লেখক ও কলামিস্ট আরজু আহমাদের কথায়।