
২০২৪ সালে আগস্ট মাসে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় কে বা কারা দুটি বাজারের সিসিটিভি ক্যামেরার কেবল কেটে ফেলে। এতে সবগুলো ক্যামেরা অচল হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ ঘটে চললেও অনেক অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা হয় নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় সড়কের ক্যামেরাগুলো নষ্ট করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। এগুলো সচল করার জন্য পুলিশের হাতে কোনো ফান্ড নেই। ক্যামেরা সচল থাকলে্ এর ফুটেজের সহায়তায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নজরদারি করা সম্ভব হতো। এতে অপরাধীদের ধরতে সহজ হতো। ক্যামেরা নষ্টের বিষয়টি তিনি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অবহিত করেছেন বলে জানা তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে একদল ডাকাত পুরাতন বাজারের চিনি মহাল সড়ক ও হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত কয়েকটি সোনার দোকান ও একটি ফলের দোকানে প্রায় ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি ও লুটপাট চালিয়েছিল। ডাকাতরা বাজারের পাহারাদারদের বেঁধে রেখেছিল। এ খবর পেয়ে টহল পুলিশের একটি দল এগিয়ে গেলে ডাকাত দল তাদের ওপর বেশ কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে একজন এসআই আহত হয়েছিলেন।
শহরের হাসপাতাল সড়ক ও চিনি মহাল সড়ক মোড়ে একটি পিলারে থাকা দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। পুরো ডাকাতির দৃশ্য দুটি ক্যামেরায় পরিষ্কার ধরা পড়ে। পুলিশ সেই ফুটেজের সূত্র ধরে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ১১ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল। এছাড়া নতুন বাজারের অনতিদূরে নান্দাইল সরকারি শহীদস্মৃতি কলেজের ভেতরে ছাত্র হত্যার ঘটনায় জড়িত একাধিক অভিযুক্তকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
এছাড়া চালককে হত্যা করে অথবা অজ্ঞান বা বেখেয়াল করে ইজিবাইক ছিনতাইকারী একটি বড় চক্রকে সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছিল পুলিশ।সিসিটিভি ফুটেজের সহায়তায় বেশকিছু অপরাধের সুরাহা করেছিল থানা-পুলিশ। সাধারণ মানুষ ও শহরের ব্যবসায়ীরা ছোটখাট অপরাধমূলক ঘটনার সূত্র খুঁজতে ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্য থানায় স্থাপন করা মনিটরে দেখে যেতে পারতেন।
নান্দাইল পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. রফিকুজ্জামান ভূঁইয়া মনির বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা একটি উন্নত প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে নান্দাইল উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও সারমিনা সাত্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে দুটি বাজার নান্দাইল পৌরসভার আওতাধীন। পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. ফয়জুর রহমান। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে পৌর প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।