
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার গজারমারী থেকে খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে। কাজ শুরুর ১০ মাসের মধ্যে শেষ হওয়া কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। পরে তিন দফায় বেড়েছে সময়। এতে দেখা যায় ১০ মাসের কাজ প্রায় চার বছর হতে চললেও এখনো বাকি অর্ধেক অংশ।
সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ভাঙাচোরা এ সড়কটি দিয়েই হেলেদুলে চলছে যানবাহন। এতে মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ওই সড়কের সেতুগুলোর কাজও এখনও শেষ হয়নি। ফলে স্থানীয়রা সেতুর ওপর বাঁশের চাটাই বিছিয়ে চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এ সড়কটির সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কতৃপক্ষ। এলজিইডি ঠিকাদার নিয়োগ করে সড়কটি সংস্কারের উদোগ নেয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও ঠিকাদারের সীমাহীন
গাফিলতির কারণে সড়কটির সংস্কার কাজ দেরি হচ্ছে।
তবে কলমাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলীর দাবি, দ্রুত কাজ
শেষ করতে ঠিকাদারকে বার
বার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়
বাসিন্দা ও উপজেলা প্রকৌশলীর
কার্যালয় সূত্রে জানা যায়,
গজারমারী থেকে খারনৈ ইউনিয়ন
পরিষদ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ
কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি সংস্কারকাজ পায়
‘মেসার্স বিলকিছ এন্টারপ্রাইজ’ নামে
একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের
ব্যয় ধরা হয় ৬
কোটি ৩৫ লাখ ৫৮
হাজার ৪৮২ টাকা।
২০২১ সালের ৮ এপ্রিল
কাজ শুরু হয়ে ২০২২
সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ
হওয়ার কথা। কিন্তু
নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ
করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এ
কারণে সময় বাড়ানো হয় তিন
দফা। শেষ
দফায় বাড়ানো সময় অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৩০
আগস্ট কাজ শেষ হওয়ার
কথা। কিন্তু
এখনো বাকি রয়েছে প্রায়
৫০ ভাগ কাজ।
এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, শুরু থেকেই সড়কে
ঢিমেতালে কাজ হচ্ছে।এছাড়া নিম্নমানে সামগ্রী ব্যবহার করেন ঠিকাদার।
এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা
প্রতিবাদ করলেও কোন কাজ হয়নি। খারনৈ
এলাকার বাসিন্দা রহমত আলী বলেন,
ঠিকাদার সড়ক সংস্কারের নিম্নমানের
সামগ্রী ব্যবহার করছেন। এ
ছাড়া তিন দফা মেয়াদ
বাড়িয়ে অর্ধেক কাজ করে
বাকি কাজ রেখে এখন
পালিয়ে গেছেন ঠিকাদার। স্থানীয়রা
বারবার প্রতিবাদ করলেও এর কোন
ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষ।'
সম্প্রতি
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের
সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে।
যানবাহন চলাচল করায় আশপাশের
এলাকা ধুলায় ছেয়ে যাচ্ছে। ধুলা
থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে
ইজিবাইক, অটোরিকশা, রিকশা ও মোটরসাইকেলসহ
বিভিন্ন যানবাহনে থাকা যাত্রীরা নাকমুখ
ঢেকে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। সড়কের বিভিন্ন
অংশে ইটের খোয়া উঠে
গেছে। অনেক
জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বেশ
কিছু গর্ত। সড়কের
সেতুগুলোর কাজও শেষ হয়নি। ফলে
স্থানীয় লোকজন সেতুর ওপর
বাঁশের চাটাই ফেলে চলাচল
করছে।
সড়কের বেহলা দশার কারনে কোন
যানবাহনও সহজে যেতে চায়
না। গেলেও
বেশি ভাড়া দিতে হয়। এই
সড়ক দিয়ে খারনৈ, লেংগুরা
ও নাজিরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজার
মানুষ চলাচল করে।
ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. শামসুদ্দীন হায়দারের
মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ
করলে ফোন ধরেননি।।
কলমাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী মো.
মমিনুল ইসলাম বলেন, এই
সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ
করার জন্য ঠিকাদারকে বারবার
তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।
ঠিকাদার কয়েক দিনের মধ্যে
আবারও কাজ শুরু করবেন
বলে জানিয়েছেন। না
করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।